ভারতীয় টেলিকম কোম্পানিগুলির মধ্যে চলমান প্রতিযোগিতা সম্পর্কে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সবাই খুব স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারছে। প্রতিটি কোম্পানি নিজেকে বেশি ভালো ও উন্নত দেখাতে ব্যাস্ত। যত বেশি সম্ভব গ্ৰাহক আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যে সবকটি কোম্পানিই কম দামে বেশি লাভজনক প্ল্যান পেশ করে চলেছে। যদিও এই সব প্ল্যানে সবচেয়ে বেশি লাভবান ইউজাররাই হন। কিন্তু প্রায়ই ইউজাররা কনফিউশনে ভোগেন যে কোন কোম্পানির প্ল্যান নেওয়া উচিত এবং কোন কোম্পানির প্ল্যান রিচার্জ করলে সবচেয়ে কম খরচে সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়া যাবে। সবচেয়ে বড় কথা বর্তমানে মার্কেটে মানুষের সব ধরনের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে সব ধরনের বাজেটের প্ল্যান আছে। কিন্তু আজ আমরা কথা বলব 500 টাকার ওপরের প্ল্যানের ব্যাপারে। আমরা Reliance Jio এর 555 টাকা, Bharti Airtel এর 558 টাকা এবং Vodafone এর 569 এর তুলনামূলক আলোচনা করেছি, যার মধ্যে থেকে আপনি আপনার পছন্দ এবং সুবিধা অনুযায়ী প্ল্যান বেছে নিতে পারবেন।
দাম
সবার আগে বলে নিতে হয় এই তিনটি প্ল্যানেরই দাম কিন্তু 500 টাকার ওপরের বাজেটে। Reliance Jio এর পক্ষ থেকে পেশ করা প্ল্যানটির দাম 555 টাকা, Bharti Airtel তাদের প্ল্যানটি 558 টাকা দামে পেশ করেছে এবং Vodafone এর প্ল্যানটি 569 টাকা দামে পেশ করা হয়েছে। অর্থাৎ Jio এর প্ল্যানের থেকে Airtel এর প্ল্যানটির দাম 3 টাকা এবং Vodafone এর প্ল্যানটির দাম 14 টাকা বেশি।
ভ্যালিডিটি
প্রথমেই জানিয়ে রাখি Jio, Airtel এবং Vodafone কোম্পানির এই তিনটি প্ল্যানই দীর্ঘকালীন ভ্যালিডিটির জন্য পেশ করা হয়েছে। অর্থাৎ যদি কোনো ইউজার একবার এই তিনটি প্ল্যানের মধ্যে থেকে কোনো একটি প্ল্যান রিচার্জ করেন তবে পরবর্তী আড়াই মাসেরও বেশি সময় তিনি নিশ্চিন্তে এবং কোনোরকম পরিবর্তন ছাড়াই এই প্ল্যান উপভোগ করতে পারবেন। Jio এর 555 টাকা দামের প্ল্যানটির ভ্যালিডিটি 84 দিন এবং Vodafone এর 569 টাকা দামের প্ল্যানটির ভ্যালিডিটিও 84 দিন। তবে Airtel এর 558 টাকা দামের প্ল্যানটির ভ্যালিডিটি 82 দিন।
ইন্টারনেট ডেটা
Jio তাদের 555 টাকার প্ল্যানে প্রতিদিন 2 জিবি করে 4জি ডেটা দেয়। অর্থাৎ 84 দিনের ভ্যালিডিটি জুড়ে মোট 168 জিবি (84 × 2 = 168) 4জি ইন্টারনেট ডেটা উপভোগ করা যায়।
তবে Airtel তাদের 558 টাকার প্ল্যানে Jio এর থেকে বেশি ইন্টারনেট ডেটা দেয়। এই প্ল্যানে প্রতিদিন 3 জিবি করে 4জি ডেটা পাওয়া যায়। অর্থাৎ এই প্ল্যানে পুরো ভ্যালিডিটিতে মোট 246 জিবি (82 × 3 = 246) ডেটা পাওয়া যায়।
অন্যদিকে Vodafone এর 569 টাকা দামের প্ল্যানেও Airtel এর মতোই প্রতিদিন 3 জিবি করে ইন্টারনেটে ডেটা পাওয়া যায়। অর্থাৎ 84 দিনে মোট 252 জিবি (84 × 3 = 252) 4জি ইন্টারনেট ডেটা পাওয়া যাচ্ছে।
ভয়েস কলিং
এই তিনটি প্ল্যানেই কোম্পানি আনলিমিটেড ভয়েস কলিঙের সুবিধা দেয়। কিন্তু Jio এর প্ল্যানে অন নেট কলিং সম্পূর্ণভাবে ফ্রি হলেও অফ নেট কলের জন্য কোম্পানির পক্ষ থেকে মাত্র 3,000 মিনিট দেওয়া হচ্ছে। তবে Airtel ও Vodafone তাদের গ্ৰাহকদের অন নেট ও অফ নেট উভয় কলই সম্পূর্ণভাবে ফ্রি রেখেছে। অর্থাৎ আনলিমিটেড অন নেট এবং অফ নেট ভয়েস কল উপভোগ করা যায়।
আরও পড়ুন : ওড়িশায় দুর্ঘটনা : বিস্ফোরণে মৃত্যু হল ফোন মাথার কাছে রেখে ঘূমন্ত 22 বছর বয়সী যুবকের
কোন প্ল্যানে লাভ এবং কোন প্ল্যানে লোকসান
Reliance Jio এর প্ল্যানটি যতই Airtel ও Vodafone এর প্ল্যানের চেয়ে 3 টাকা ও 14 টাকা সস্তা হোক না কেন, বেনিফিটের দিক থেকে Airtel এর 558 টাকা এবং Vodafone এর 569 টাকার প্ল্যানদুটি Jio এর 555 টাকা দামের প্ল্যানের তুলনায় যথেষ্ট বেশি লাভজনক। Jio নাম্বার থেকে অফ নেট কল করলে IUC প্রয়োগ করা হলেও Vodafone এবং Airtel এর ক্ষেত্রে বিনামূল্যে আনলিমিটেড কল উপভোগ করা যায়।
প্রতিদিন ডেটার ক্ষেত্রেও Vodafone এবং Airtel এর থেকে Reliance Jio প্রতিদিন 1 জিবি করে কম 4জি ডেটা দেয়। পুরো ভ্যালিডিটি জুড়ে Airtel তাদের গ্ৰাহকদের Jio এর তুলনায় 78 জিবি এবং Vodafone 84 জিবি বেশি ডেটা দেয়। একইভাবে Vodafone এর ক্ষেত্রে Airtel এর তুলনায় 6 জিবি বেশি ডেটা এবং 2 দিন বেশি ভ্যালিডিটি পাওয়া যায়।
আমাদের ফেসবুকে ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন